রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ০৩:২১ পূর্বাহ্ন
স্টাফ রিপোর্টার :: যাত্রাবাড়ীতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার ওপর হামলার অভিযোগে দায়েরকৃত মামলায় সিনিয়র সাংবাদিক, পেশাদার গণমাধ্যমকর্মী দৈনিক মুক্তির লড়াই পত্রিকার মফস্বল সম্পাদক সরকার জামালকে আসামি করায় দৈনিক মুক্তির লড়াই পরিবার এর তীব্র প্রতিবাদ ও নিন্দা জানিয়েছে। দৈনিক মুক্তির লড়াই পরিবার এ ঘটনায় বিস্মিত ও মর্মাহত। দৈনিক মুক্তির লড়াই পরিবারের পক্ষে সম্পাদক ও প্রকাশক কামরুজ্জামান জনি বলেন, সাংবাদিক সরকার জামাল বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার যৌক্তিক আন্দোলনের সব কর্মসূচি প্রচার ও প্রকাশে যথাযথ দায়িত্ব পালন করেছেন। তিনি প্রায় ২০ বছর ধরে মূলধারার একজন পেশাদার সাংবাদিক হিসেবে দায়িত্ব পালন করে সুনাম অর্জন করেছেন। নিরপরাধ সাংবাদিক সরকার জামালকে মিথ্যা মামলা থেকে অবিলম্বে নিঃস্বার্থে মুক্তি দেওয়ার দাবি জানান।
গত ১৮ জুলাই ২০২৪ ইং তারিখে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে যাত্রাবাড়ী এলাকায় গুলিবিদ্ধ হয়ে মোঃ শাকিল নিহতের ঘটনায় দায়ের করা হত্যা মামলায় ষড়যন্ত্রমূলকভাবে সাংবাদিক সরকার জামালকে ৪০নং আসামি করা হয়। কৌশলে মামলার এজাহারে তার নামের আগে সাংবাদিক পরিচয়টাও লেখা হয়নি।
দৈনিক রূপবানী পত্রিকার সম্পাদক ও প্রকাশক ফারুক আলম বলেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মধ্য দিয়ে যে পরিবর্তন আমাদের লক্ষ্য ছিল, সে পরিবর্তনকে বাধাগ্রস্ত করতে একটি মহল উঠে পড়ে লেগেছে। একের পর এক ছাত্র-জনতা হত্যা মামলায় গণহারে আসামি করা হচ্ছে নিরপরাধ মানুষদের। এরই ধারাবাহিকতায় পেশাদার সাংবাদিক সরকার জামালের বিরুদ্ধে যে মিথ্যা মামলা হয়েছে আমি তার তীব্র নিন্দা জানাই। তিনি বলেন, প্রতিটি হত্যাকাণ্ডের বিচার হোক তা আমরা চাই, কিন্তু হত্যাকাণ্ডের ঘটনাকে পুঁজি করে ফায়দা লুটবেন তা আমরা চাই না। হত্যাকাণ্ডকে পুঁজি করে যারা নিরীহ সাংবাদিকদের আসামি করছেন এসব ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে তিনি বলেন, মামলাকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে দয়া করে কেউ নিরপরাধ কাউকে আসামি করবেন না।
দৈনিক স্বাধীন সংবাদ পত্রিকার সম্পাদক ও প্রকাশক আনোয়ার হোসেন আকাশ বলেন, গত ৯ সেপ্টেম্বর যাত্রাবাড়ি সিনিয়র সাংবাদিক সাংবাদিক সরকার জামালের বিরুদ্ধে যে মামলা হয়েছে আমি এর তিব্র নিন্দা জানাই। তারা ছাত্রজনতার আন্দোলনের বিরুদ্ধে ছিলেন না। পেশাদার সাংবাদিক হিসেবে আন্দোলনের সংবাদ প্রচার করেছেন। কিন্তু ষড়যন্ত্রমূলকভাবে দুষ্কৃতিকারীরা সাংবাদিকদের নামে মামলা দিয়ে হয়রানি করছে। এই মামলা স্বাধীন গণমাধ্যমের অন্তরায়। অবিলম্বে মামলা থেকে তার নাম প্রত্যাহার করার দাবি জানাই।
সম্প্রতি বাংলাদেশ মফস্বল সাংবাদিক ফোরামের পক্ষ থেকে গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে সংগঠনটির ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান আহমেদ আবু জাফর বলেন, এসব হয়রানিমূলক মামলায় আসামি সাংবাদিকরা পেশা ও ঘরবাড়ি ছেড়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছে, জামিনও মিলছে না। অনেকের ঘরবাড়ি-অফিসে হামলা, অগ্নিসংযোগ, লুটপাট, মোটর সাইকেল ও ক্যামেরা ছিনতাই করা হয়েছে। মামলা ও হামলাকারীদের ভয়ে পরিবার-পরিজনের খোঁজ খবরটুকুও নিতে পারছে না। প্রায় দুই মাস ধরে এসব হয়রানির শিকার সাংবাদিকের পরিবারগুলোর অনেকেই অনাহারে-অর্ধাহারে চরম খারাপ সময় পার করছেন। জুলাই এবং আগস্টে হত্যাকান্ডকে কেন্দ্র করে সারাদেশে কয়েক হাজার মামলা দায়ের হয়েছে। এসব স্পর্শকাতর অধিকাংশ মামলায় শত শত নিরীহ সাংবাদিককে আসামি করা হয়েছে; যা নিন্দনীয়। আগামীতে আর কোনো গণমাধ্যম কর্মীকে যেন হয়রানিমূলক মিথ্যা মামলায় আসামি করা না হয় সে বিষয়ে আরও দায়িত্বশীল হতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর প্রতি দাবিও জানান তিনি ।
মামলার বিষয়ে ভুক্তভোগী সাংবাদিক সরকার জামাল বলেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে আমি ছাত্র-জনতার পক্ষে প্রকৃত ঘটনা তুলে ধরে পেশাগত দায়িত্ব পালন করেছি। তবে মামলায় উল্লেখিত ঘটনার দিন ১৮ জুলাই আমি যাত্রাবাড়ী এলাকায় ছিলামই না, যাহা আমার ব্যবহৃত মোবাইল নম্বরের লোকেশন ট্রাকিং করা হইলে তদন্তকারী সংস্থা নিশ্চিত হতে পারবে। প্রকৃতপক্ষে একটি মামলাবাজ আলমগীর সেলিম চক্র বিগত স্বৈরাচারী আওয়ামী সরকার থাকাকালীন সময় থেকেই আমার বিরুদ্ধে একাধীক মিথ্যা ও হয়রানীমূলক মামলা দিয়ে আসছে। যেসব মামলায় সঠিক তদন্তের মাধ্যমে আমি আদালতে নিরাপরাধ প্রমাণিত হই।
এই হত্যা মামলাটিও তেমনিভাবে হয়রানী করার জন্য একাধীন নিরপরাধ মানুষকে আসামী করে মোটা অঙ্কের টাকা দাবি করছে ঐ মামলাবাজ আলমগীর সেলিম চক্র। যা নিয়ে এলাকার সাধারণ মানুষদের মধ্যে চরম ক্ষোভ বিরাজ করছে। মামলার বাদীর সরলতার সুযোগ নিয়ে মামলাবাজ আলমগীর সেলিম চক্রটি এসব অপকর্ম চালিয়ে যাচ্ছে। আলমগীর সেলিমের প্রতারণা বিষয়ে এর আগে একাধীক গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশ হয়েছে। এবং মামলাবাজ চক্রের হোতা আলমগীর সেলিমের বিরুদ্ধেও একাধীক মামলা চলমান রয়েছে। র্যাব-১০ এর হাতে যাত্রাবাড়ী এলাকায় চাঁদাবাজী করার সময় আলমগীর সেলিম হাতেনাতে গ্রেফতার হয়েছিলেন। কিন্তু এতোকিছুর পরেও থেমে থাকেনি এদের অপরাধ। সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে এর যথাযথ আইনগ ব্যবস্থা গ্রহণের জোড় দাবি জানাচ্ছি।